৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রাইড শেয়ারিং সেবা নেটওয়ার্ক উবার এবং পাঠাওকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার, কাওসার মেহমুদ নামের এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, রাইড শেয়ারিং বিধিমালা ২০১৭ লঙ্ঘন করে বিআরটিএ-এর অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উবার একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যা ভারত থেকে পরিচালিত ও তত্ত্বাবধান করা হয়। বাংলাদেশে এর কিছু অফিস রয়েছে, যার কাজ মূলত অর্থ সংগ্রহ করা।
প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্তত ১ লাখ ৫০ হাজার পরিবহণ অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে উবার ও পাঠাওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে, যারা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ, ফুড ডেলিভারি ইত্যাদি কাজ করে। রাইড শেয়ারিং বিধিমালায় কোনো নির্দেশনা না থাকলেও, কোম্পানিগুলো পরিবহণ ব্যবসায়ীদের আয়ের ওপর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন, অ্যাডভান্স প্ল্যাটফর্ম ফি, সার্ভিস চার্জ, বুকিং ফি ও ট্যাক্স ইত্যাদি নিয়ে থাকে, যা প্রতারণামূলক।
বিধিমালার মোতাবেক, রাইড শেয়ারিং কোম্পানি এক লাখ টাকা প্রদান করে বিআরটিএ থেকে এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে ব্যবসা করতে পারবে। বিধিমালায় উল্লেখ না থাকলেও, কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে গ্রহণ করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ।
কিছু দেশীয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি (ইন ড্রাইভ) রয়েছে, যারা এক টাকাও কমিশন নেয় না। বাংলাদেশে গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কোথাও কোনো টাকাপয়সা দিতে হয় না। এসব প্রতিষ্ঠানেরও হাজার হাজার কর্মচারী রয়েছে। গুগল-ফেসবুকের মতো রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোও অনলাইন অ্যাপ পরিচালনা করে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বাংলাদেশে আট বছর ধরে তারা সরকারকে কত হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়েছে, তাদের আয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তাদের আয়-ব্যয়ের পূর্ণ হিসাব এবং বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া এবং কত টাকা পাঠিয়েছে, তাও লিগ্যাল নোটিশে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একজন গাড়ির ড্রাইভার যদি তিন হাজার টাকা একদিনে আয় করেন, তবে সেখানে অন্তত এক হাজার টাকা উবার ও পাঠাও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে কেটে নিচ্ছে। এভাবে বিগত আট বছরে তারা হাজার কোটি টাকার পাহাড় গড়েছে। সুতরাং, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, তাদের বিরুদ্ধে সংবিধানের ১০২ ধারার বিধিমতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।