হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিনের মান উন্নয়নসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করে প্রায় চার ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা। এই অবরোধের ফলে রাজেন্দ্রপুর থেকে মাওনা চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, যা হাজারো যাত্রী ও পরিবহন ব্যবস্থার জন্য বড় ভোগান্তির কারণ হয়।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকরা তাদের দাবিগুলো নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেন। শ্রমিকদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধে মহাসড়কে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। পরে, দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নিলে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান এবং প্রায় ১২টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রমিকদের দাবিগুলো ছিলো:
- হাজিরা বোনাস ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,০০০ টাকা করা।
- হেলপার এবং নিু-গ্রেডের শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা।
- টিফিন বিল ২২ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা করা।
- নাইট শিফট বিল অপারেটর এবং সমপর্যায়ের গ্রেডধারীদের জন্য ৫০ টাকার পরিবর্তে ৮০ টাকা এবং একই গ্রেডের অন্যান্য শ্রমিকদের জন্য ৭০ টাকা করা।
- কাজে উপস্থিতির জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত পাঁচ মিনিটের সুবিধা দেওয়া।
- গালি-গালাজ, হয়রানি এবং অপেশাদার আচরণের অভিযোগ উঠলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি।
শ্রমিকরা জানান, তাদের পাশের মন্ডল ইন্টিমেন্টস কারখানার শ্রমিকরাও একই ধরনের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে তাদের দাবি আদায় করেছে। সেই উদাহরণ অনুসরণ করেই তারা তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনে নেমেছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের বাঘের বাজার জোনের পরিদর্শক সুমন মিয়া জানান, শ্রমিকদের দাবি পূরণ করা হয়েছে এবং তারা দুপুর ১২টার দিকে রাস্তা ছেড়ে দেন, যার ফলে চার ঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক (এজিএম) রেজাউল করিম বলেন, “শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ ধরনের সমস্যা ভবিষ্যতে আর হবে না।”
গাজীপুরসহ বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ নতুন কিছু নয়। শ্রমিকরা প্রায়ই হাজিরা বোনাস, বেতন বৃদ্ধি, কর্মপরিবেশের উন্নতি, এবং অন্যান্য সুবিধার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এর ফলে গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে বেশ কয়েকবার শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, যা শুধুমাত্র কারখানা নয়, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া, এই ধরনের আন্দোলন শিল্পাঞ্চলে যানজটের পাশাপাশি ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণ হয়।