পিতার আগে পুত্র বা কন্যা মারা গেলে নাতি-নাতনীরা কি সম্পত্তি পাবে (দাদার / নানার)?

admin
By admin
3 Min Read

পিতার আগে পুত্র বা কন্যা মারা গেলে পিতার মৃত্যুর পর মৃত পুত্র বা কন্যা জীবিত থাকলে যতটুকু পেতো ততটুকু মৃত পুত্রের বা কন্যার সন্তানরা পায়। ১৯৬১ সনে মুসলিম পারিবারিক আইনে শিয়া নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। আওলাদের সংজ্ঞাকে বর্ধিত করে নাতি-নাতনী পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। একে প্রতিনিধিত্বের মতবাদ বলা হয়। এখানে নাতি-নাতনীরা তাদের মৃত বাবার (পুত্র) বা মৃত মায়ের (কন্যার) ওয়ারীশ হিসাবে সম্পত্তি নয়, মৃত দাদার (মৃত পুত্রের পিতা) বা মৃত নানার (মৃত কন্যার পিতা) ওয়ারীশ হিসাবে সম্পত্তি পায়। [একই নিয়ম দাদী ও নানীর ক্ষেত্রেও।]

পিতার আগে পুত্র (বা কন্যা) মারা গেলে যদি পিতা ১৯৬১ সনের ১৫ই জুলাই বা তারপরে মারা যায় তবে মৃত পুত্র বা কন্যা জীবিত থাকলে যতটুকু পেতো ততটুকু সম্পত্তি মৃত পুত্রের (বা মৃত কন্যার) সন্তানরা পাবে [মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৪ ধারা] কিন্তু মৃত পুত্রের বিধবা স্ত্রী (পুত্রবধূ) কিছু পাবে না। একই ভাবে মৃত কন্যার বিপত্নীক স্বামী কিছু পাবে না।

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ধারা ৪ঃ

শিরোনামঃ উত্তরাধিকার[Succession/Inheritance]

আলোচ্য বিষয়ঃ যার* সম্পত্তি বন্টন বা ভাগ বা বাটোয়ারা করা হবে [Propositus], তার মৃত্যুর পূর্বে তার কোন পুত্র বা কন্যা মারা গেলে এবং উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির বন্টনের সময় উক্ত পুত্র বা কন্যার কোন সন্তানাদি জীবিত থাকলে তারা সেই হারে [equivalent] সম্পত্তি পাবে, যা তাদের পিতা বা মাতা জীবিত থাকলে পেতো। এখানে প্রতিনিধিত্বের নীতি বা মতবাদ [Doctrine of Representation] স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

* এখানে “যার” বলতে – দাদা / দাদী / নানা / নানী।

[এই নিয়ম বা সংশোধন সহীহ হয়েছে কি না, ইসলাম সম্মত কি না, তা এই পোস্টের আলোচ্য বিষয় নয়। এটা নিয়ে আমরা ভবিষ্যতে আলোচনা করতে পারি।]

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ঃ (https://www.banglalawshub.com/…/muslim-family-laws…)

[আরেকটি_কনফিউশন দেখা যায়, পিতা ১৯৬১ সনের আগে মারা গেছেন, দাদা ১৯৬১ সনের ১৫ই জুলাইয়ের পর মারা গেলে নাতি-নাতনীরা সম্পত্তি পাবে কি না? জ্বী পাবে। পিতা কবে মারা গেছেন এটা বিষয় নয়, দাদা ১৯৬১ সালের ১৫ই জুলাই বা তার পরে মারা গেলে নাতি-নাতনীরা সম্পত্তি পাবে।

সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ সিদ্ধান্ত দিয়েছেনঃ

“মৃত ব্যক্তির কন্যা সন্তান ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার আগে না পরে মারা গেছেন, তা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং সাকসেশন কবে অপেন হয়েছিলো, সেটাই মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।” [44 DLR (AD) 1992 Page 276]

উপরোক্ত মামলায় কন্যা মারা যায় ১৯৫৫ সালে। পিতা মারা যায় ১৯৮৪ সালে। অর্থাৎ সাকসেশন অপেন হয় ১৯৮৪ সালে। তাই ১৯৫৫ সনের মৃত কন্যার কন্যাকে উত্তরাধিকার ঘোষণা করা হয়। ]

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *